ভোমরা স্থলবন্দরের সকল কার্যক্রম ম্যানুয়াল পদ্ধতি হতে ডিজিটালাইজেশনে রূপান্তর এবং ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ‘ডিজিটালাইজেশন অব দ্যা বর্ডার প্রসিডিউরস এ্যাট ভোমরা ল্যান্ডপোর্ট’ শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। গ্লোবাল এলাইয়েন্স ফর ট্রেড ফেসিলিটেশন (জিএটিএফ) এর অর্থায়নে এবং সুইস ফাউন্ডেশন ফর টেকনিক্যাল কোঅপারেশন (সুইসকন্টাক্ট) এর সহযোগিতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বন্দরের সকল সেবা স্মার্ট গভর্ন্যান্স এর মাধ্যমে পরিচালিত হবে এবং সকল সেবা গ্রহীতা হবেন স্মার্ট সিটিজেন। আমাদের সকল নাগরিক অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধমে বন্দরে সেবা গ্রহণ করবেন। এতে করে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে সময় ও অর্থের সাশ্রয় হবে।
প্রকল্পটির মেয়াদ ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সাত কোটি টাকা ব্যয় হবে। এ টাকা মঞ্জুরি হিসেবে পাওয়া যাবে। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি প্রধান অতিথি হিসেবে আজ ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘ডিজিটালাইজেশন অব দ্যা বর্ডার প্রসিডিউরস এ্যাট ভোমরা ল্যান্ডপোর্ট’ শীর্ষক প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামাল, সুইস ফাইন্ডেশন ফর টেকনিক্যাল কোঅপারেশন (সুইসকন্টাক্ট) এর পরিচালক মিজ স্টিফানি ড্রিফাস (ms. stephanie dreifuss), গ্লোবাল এলাইয়েন্স ফর ট্রেড ফেসিলিটেশন (জিএটিএফ) এর পরিচালক ফিলিপ আইলার (phlippe isler), সুইসকন্টাক্ট এর কান্ট্রি ডিরেক্টর মুজিবুল হাসান এবং প্রকল্প পরিচালক ডি এম আতিকুর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভোমরা স্থলবন্দরের এই ডিজিটালাইজেশন প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি আধুনিক, সমৃদ্ধশালী এবং উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। স্থলপথে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সম্ভাবনাকে বাস্তব রূপ দিতে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার সঠিক দিক নির্দেশনায় বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশের সাথে প্রযুক্তি নির্ভর বাণিজ্যিক কার্যক্রম ও কানেক্টিভিটি সম্প্রসারণে একটি নতুন মাইলফলক স্থাপিত হলো। উল্লেখ্য, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলাতে ২০১৩ সাল থেকে ভোমরা স্থলবন্দর এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ঢাকা থেকে এর দূরত্ব প্রায় ২৫০ কিলোমিটার।
বর্তমানে এই পোর্টটি ভারত প্রান্তে, চব্বিশ পরগণা জেলার ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দর এর সাথে সংযুক্ত ও কলকাতা হতে ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। ভোমরা স্থলবন্দরটি পদ্মা ব্রীজ হতে ২২০ কিলোমিটার এবং মোংলা বন্দর হতে ১১৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে প্রতিবেশী দেশের সাথে সাতক্ষীরা জেলার ভোমরা স্থলবন্দরের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি পণ্য দ্রুত ও স্বল্পসময়ে রাজধানী ঢাকায় প্রবেশ করছে। এতে স্থলবন্দর সমূহের কর্মচাঞ্চল্য ও সমৃদ্ধি সাধিত হচ্ছে। পণ্য আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে ভোমরা স্থলবন্দর বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতিদিন গড়ে ৪৫০ থেকে ৫০০টি কার্গো ভারত থেকে পণ্য নিয়ে ভোমরা স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং প্রায় ৫০ থেকে ৬০টি কার্গো পণ্য নিয়ে ভোমরা স্থলবন্দর থেকে ভারতে প্রবেশ করে। যার মাধ্যমে প্রতিবছর গড়ে প্রায় তিন মিলিয়ন মেট্রিক টন পণ্য আমদানি ও রপ্তানি হয়ে থাকে।
অনুষ্ঠানে স্থলবন্দরের ফ্যাসিলিটি চার্জসহ অন্যান্য চার্জ 'একপে' এর মাধ্যমে মাধ্যমে গ্রহণ করার লক্ষ্যে এটুআই প্রোগ্রাম এবং বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে পারস্পারিক সমঝোতা স্মারকপত্র স্বাক্ষরিত হয়। এবং স্থলবন্দরের ফ্যাসিলিটি চার্জসহ অন্যান্য চার্জ 'বিকাশ'এর কিউআর কোড এর মাধ্যমে মাধ্যমে গ্রহণ করার লক্ষ্যে 'বিকাশ' ও বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে পৃথক আরো একটি পারস্পারিক সমঝোতা স্মারকপত্র স্বাক্ষরিত হয়।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভ্রমণকারী ও পর্যটকদের উন্নত সেবা প্রদান এবং ভ্রমণ স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি 'হেল্প ডেস্ক' প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং 'টুয়েলভ ইভেন্টস এমজিএ' এর সাথে পারস্পারিক চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিপত্রগুলোতে বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো.আলমগীর, এটুআই প্রোগ্রাম এর পক্ষে প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, 'বিকাশ' লিমিটেডের এডভাইজার মো.আব্দুল আজিজ খান এবং 'টুয়েলভ ইভেন্টস এমজিএ' এর পক্ষে ম্যানেজিং পার্টনার উইং কমান্ডার এ টি এম নজরুল ইসলাম।